Deleted:আখতার হোসেন আজাদ

From WikiAlpha
Revision as of 10:48, 16 February 2022 by Azad (Talk | contribs) (Created page with "আখতার হোসেন আজাদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের স্ন...")

(diff) ← Older revision | Latest revision (diff) | Newer revision → (diff)
Jump to: navigation, search

আখতার হোসেন আজাদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী। পড়ালেখার পাশাপাশি লেখালেখি, ফ্রিল্যান্সিং এবং ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে যুক্ত রয়েছেন। তারই গল্প জানাচ্ছেন রওনক জাহান।

ছোটবেলার গল্প বাবা পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস হওয়ায় প্রচন্ড আর্থিক অনটনে কেটেছে আমার ছোটবেলা। শত প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও মহান সৃষ্টিকর্তার কৃপা এবং আমার বাবা মায়ের সার্বিক প্রচেষ্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সেরা বিদ্যাপীঠ হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক ও নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপ্ত করেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রারম্ভিক গল্প উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে ভর্তি হই। প্রত্যেকটি কোর্স ইংরেজি ভার্সন হওয়ায় প্রথম দিকে প্রচন্ড ভয় পেতাম। ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও শিক্ষকদের দিক-নির্দেশনায় ভয় কাটিয়ে উঠি। প্রথম বর্ষেই বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে যুক্ত হই। নিয়মিত অধ্যয়ন ও সামাজিক সংগঠন এটিকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক রুটিন করে নিয়েছিলাম।

সামাজিক সংগঠনের গল্প বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। সর্বপ্রথম রোটার‌্যাক্ট ক্লাবে আমি যুক্ত হই। পরে রোভার স্কাউট, কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ (সিওয়াইবি), লণ্ঠন, বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামে কাজ করছি। সেবামূলক কাজ করার ইচ্ছে যেন আমার রক্তে মিশে গেছে। সামাজিক সংগঠনে কাজ করে আত্মিক তৃপ্তি লাভ করি। যেকোনো কাজ করার সময় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পালন করতে চেষ্টা করি। সামাজিক সংগঠনগুলোতে যুক্ত হবার পর থেকে যেসব আমার কাজ ছিল না, সেগুলোও বড় ভাই-আপুরা আমাকে করতে দিতেন। তখন একটু বিরক্ত লাগতো এবং মনে মনে বলতাম, ‘এতো মানুষ থাকতে কেন যে সব কাজ শুধু আমাকে দিয়েই করায়’? এখন বুঝি আসলে ভরসার স্থান থেকে আমাকে সেগুলো প্রদান করা হতো। পূর্বে রোটার‌্যাক্ট ক্লাব অব ইসলামিক ইউনিভার্সিটির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতি, ইবি রোভার স্কাউটের ইউনিট কাউন্সিল সম্পাদক ও বর্তমানে সভাপতি, ভোক্তা অধিকার ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে সচেতনতা সৃষ্টিকারী সংগঠন কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশের (সিওয়াইবি) কেন্দ্রীয় প্রচার ও সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে কাজ করছি। এছাড়াও ক্যাম্পাসের সকল সামাজিক সংগঠন সমূহের জোট ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চের (ঐক্যমঞ্চ) আহŸায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। বিভিন্ন দায়িত্ব পালনের সময় সবসময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে চেষ্টা করি। আমি প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর সময় সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, ‘পদের ভারে আমি যেন অহংকারী না হয়ে যাই’।

লেখালেখি লেখালেখিতে আমি একদমই নতুন এবং নিয়মিত শিখছি। তবে এতে প্রবল আগ্রহ কাজ করে। ২০১৮ সাল থেকে সমসাময়িক ও অভিজ্ঞতার আলোকে মনের কথাগুলো পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করি। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকায় ১১৮টি ছোট-বড় লেখা প্রকাশ হয়েছে। দেশের তরুণ লেখকদের সর্ববৃহৎ সংগঠন বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি, পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সম্পাদকীয় পর্ষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করেছি। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কার লাভ করেছি; যার সম্পূর্ণ কৃতিত্বের দাবিদার বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম।

পড়ালেখা ও সামাজিক সংগঠন সমান্তরাল? নাকি সাংঘর্ষিক..... সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারলে সামাজিক সংগঠন অধ্যয়নের সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। এসবে নেটওয়ার্কিং যেমন বহুগুণে বৃদ্ধি হয়, তেমনি সকলের সাথে মেলামেশার ফলে মন প্রফুল্ল থাকে। মদ, নেশা তথা সকল প্রকার মাদক থেকে নিজেকে দূরে রেখে সুশৃঙ্খল জীবন গঠন করা যায়। নেতৃত্ব গুণাবলী তৈরি হয়। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সক্ষমতা গড়ে উঠে। জড়তা দূর হয়। নানা ইতিবাচক গুণাবলী সৃষ্টি হয়, যা বলে শেষ করা যাবে না এবং কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসব বৈশিষ্ঠ্য কোনোভাবেই অর্জন করা সম্ভব নয়। সামাজিক সংগঠনে কাজের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে খুব কাছ থেকে মেশা যায়। ফলে একটি মধুর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন ও বাস্তবায়নে একত্রে কাজ করা যায় বলে নিজেদের মধ্যে একটি আত্মিক বন্ধন সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের মানুষ একত্রে কাজ করার ফলে ‘নানা মানুষ নানা মত’ প্রবাদ বাক্যটির বাস্তবিক প্রতিফলন দেখা যায়। সকলের মতামতকে আলোচনা, বিশ্লেষণ করে ঐক্যমতে পৌঁছাতে হয়। এতে নেতৃত্বগুণ বিকশিত হয়।

শখ অপরকে সহযোগিতা করাই যেন আমার শখ ও আত্মিক প্রশান্তির উপাদান হয়ে পড়েছে। কাউকে কোনোভাবে সহযোগিতা করার পর তার হাসিমাখা মুখ দেখতে আমার সবচেয়ে আনন্দ লাগে। তবে রক্ত দেবার সময় মনের ভেতর অন্যরকম তৃপ্তি কাজ করে। আমি এ পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছি। রক্তদানের সময় মনে হয় পৃথিবীর সব আনন্দ আমার হৃদয়ে ঢেউ খেলে যায়। পাশাপাশি নিজে কোনো তথ্য জানলে বা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কোনো দক্ষতা অর্জন করলে সে বিষয়ে অন্যদের দীক্ষিত করার প্রচেষ্টা করি। সবসময় মনে হয়, সৃষ্টিকর্তা আমাকে এ বিষয়ে জ্ঞান/দক্ষতা দিয়েছেন। তিনি চাইলেই আমাকে না জানার লোকদের দলে অন্তর্ভুক্ত করতে পারতেন। এজন্য নিজে যা জানি, সবকিছুই অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি। ব্যক্তি উদ্যোগে ক্যাম্পাসে জুনিয়রদের মাইক্রোসফট অফিস, গ্রাফিক্স ডিজাইন, অনলাইনে আয় করার বিভিন্ন বিষয়াদি আলোচনা ও হাতে কলমে শেখানোতে মত্ত থাকি। নিজেকে সবসময় বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখাও আমার শখে পরিণত হয়েছে। এজন্য বন্ধুদের মধ্য থেকে কেউ কেউ মজা করে ‘রোবট’, কেউ ‘হেল্প সেন্টার’ বলে ডাকে। আবার ক্যাম্পাসে খাদ্যে ভেজাল ও ভোক্তা অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করি বলে কেউ কেউ ‘ভোক্তা আজাদ’ নামেও ডাকে।

প্রত্যাশিত বাংলাদেশ একটি সবুজ সকালের স্বপ্ন দেখি। যেদিন থেকে মানুষ অন্যের প্রতি নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করার লড়াইতে লিপ্ত থাকবে না। সবলেরা দুর্বলের প্রতি অন্যায়, জুলুম, নির্যাতন, নিপীড়ন করবে না। দেশে কোনো রাজনৈতিক সহিংসতা থাকবে না। ধনী-গরীব ব্যবধান থাকবে না। আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা থাকবে। নিরাপদ খাদ্যের দেশ হবে। সুখে-শান্তিতে নির্ভাবনায় সকলে রাতে ঘুমাতে পারবে। ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে। আমার বিশ্বাস বর্তমান তরুণ সমাজের হাত ধরে অচিরেই সেদিন শীঘ্রই আসবে।