Md. Tajul Islam Rajib

From WikiAlpha
Revision as of 18:58, 31 January 2022 by Abdullahalimran (Talk | contribs)

Jump to: navigation, search

{{Infobox person

| name = Md. Tajul Islam Rajib

Ponishare-verified.png | image = Tajul.jpg

| native_name = মো: তাজুল ইসলাম রাজিব

| native_name_lang = bn

| nationality = Bangladeshi


| occupation = Entrepreneur

| religion = Muslim


Biography

মো: তাজুল ইসলাম রাজিব (Md. Tajul Islam Rajib) ১৪ই মার্চ ১৯৮৬ সালে নারায়ণগঞ্জে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা আলহাজ্ব মো: কাশেম এবং মা নাজমা বেগম, পরিবাবের চার ভাই বোনের ভেতর তিনিই সবার বড়। তার বাবা আলহাজ্ব মো: কাশেম নারায়ণগঞ্জ জেলার একজন স্বনামধন্য ও প্রতিষ্ঠিত ডাইং এবং গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। আশির দশকের গোঁড়া এবং নব্বই দশকের শেষ দিকে আজাদ নীট নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মো: তাজুল ইসলাম রাজিব সাহেবের বাবার ব্যবসায়ীক যাত্রা শুরু হয়। নানান উত্থান পতনের ভেতর দিয়ে ক্ষুদ্র পরিসর থেকে আজ প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি আজ বৃহৎ অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। মো: তাজুল ইসলাম রাজিব নারায়ণগঞ্জ আদর্শ স্কুল থেকে তার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন, পরবর্তীতে স্থানীয় সরকারী তোলারাম কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পড়াশোনা জীবন শেষ করেন। মো: তাজুল ইসলাম রাজিবের স্কুল জীবন থেকেই ব্যবসায়ের প্রতি ছিলো গভীর আগ্রহ, ব্যবসায়ী পিতার ছেলে বলেই তারও রক্তে মিশে গিয়েছিলো ব্যবসায়ীক চিন্তাভাবনা। ছোটবেলা থেকেই তিনি স্বপ্ন দেখতেন বড় হয়ে একজন সফল উদ্যক্তা হবেন এবং সে অনুযায়ী নিজেকে করেছেন পরিচালনা। যে বয়সে একজন কিশোর বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা আর খেলাধুলায় মেতে থাকে ঠিক সেই স্কুল জীবনেই মো: তাজুল ইসলাম রাজিব অবসর পেলেই বাবার সাথে চলে যেতেন তাদের প্রতিষ্ঠানে এবং ঘুরে ঘুরে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি কার্যক্রম খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতেন। তিনি ব্যবসায়ের প্রতি এতটাই মনোযোগী এবং অধম্য ছিলেন যে, তার আগ্রহ দেখে তার বাবা কলেজ জীবনেই তাকে প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের আসনে দায়িত্ব অর্পণ করেন। সেই সময় থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি খুব দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠানের হাল ধরেন এবং অত্যান্ত সুনাম ও দক্ষতার সমন্বয়ে এখন অবধী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন।

এরই মাঝে ২০১৯ সালে হঠাৎ করেই বিশ্বব্যাপী আবির্ভাব ঘটে মহামারি করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর, হুট করেই গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়লো। সবকিছু যখন বন্ধ হতে থাকলো তার ব্যতিক্রম ঘটলো না মো: তাজুল ইসলাম রাজিব এর ক্ষেত্রেও সরকারী বিধিনিষেধ মেনে প্রতিষ্ঠানে ঘোষণা করতে হলো অনির্দিষ্টকালের জন্য সাধারণ ছুটি! সবার মতই ঘরবন্দি হয়ে পড়তে হলো তাকেও ঠিক ঐসময়টাতে সকল ব্যবসায়ী ব্যক্তিদের মাঝে যেমন হতাশা ও দুঃশ্চিন্তা ভর হতে থাকলো, সেই সময়ে মো: তাজুল ইসলাম রাজিব গতানুগতিক মানুষের মত বসে থাকলেন না। তিনি তার প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের সকল মানুষের ভাল মন্দ ভাবনার পাশাপাশি নতুন কিছু করার চিন্তায় মগ্ন হলেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা ভাবনা করতে করতে হঠাৎই তার মাথায় আসলো বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষের, একজন শহুরে ও আধুনিক মানুষ হয়েও মৎস চাষের প্রতি তার আগ্রহ তৈরি করলেন। শুরু করলেন এই বিষয়ে বিস্তর জানাশোনা কিন্তু কিছুতেই যেন তিনি সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না! বিভিন্ন বই ও ইন্টারনেট ঘাঁটাঘাঁটি করে তার চোখে পড়লো বায়োফ্লক বিষয়ে লেখা আমেরিকান লেখক ডা. এরাম- এর একটি বই। অনলাইনে অর্ডার করে সুদূর আমেরিকা থেকে আনালেন বইটি এবং শুরু করলেন এই বিষয়ে পড়াশোনা আর গবেষণা। প্রাথমিক অবস্থায় এইভাবেই কাটতে থাকলো পেনডেমিক ও লকডাউন এর পুরোটা সময়, পরিক্ষামূলক ভাবে নিজ বাড়ীর বিশাল আঙ্গিণাকে কাজে লাগালেন। শুরুতে কয়েকটা চৌবাচ্চা তৈরি করে তাতে তেলাপিয়া, কৈ, গোলসা ও চিংড়ি চাষ করতে লাগলেন এবং পাশাপাশি দেশি-বিদেশী কয়েক প্রজাতির মাছ এনে বড় বড় অ্যাকুরিয়াম তৈরি করে তাতে মাছের পোনা ছেড়ে তা থেকে প্রজনন পদ্ধতি শুরু করলেন। সেটাতেও ঠিকঠাক সন্তুষ্ট হতে পারছিলেন না, বায়োফ্লক বিষয়টিকে কিভাবে আরও বৈজ্ঞানিক ও স্বাস্থ্যসম্মত পন্থায় এগিয়ে নেয়া যায় সেই বিষয়ে শুরু করলেন ত্বত্তিয় এবং ব্যবহারিক কার্যক্রম।

পরবর্তীতে যখন দেশের লকডাউন এবং করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করলো একটু একটু করে খুলতে থাকলো দেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ঠিক তখনই আগের মত সময় দিতে থাকলেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এবং অফিস শেষে বাড়ী ফিরে কাজ করতে থাকলেন বায়োফ্লক নিয়ে, এর মধ্যে নিজেই কিনে নিলেন বায়োফ্লকের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি। করোনা মহামারির কারণে অনেক তরুণ বেকার হয়ে পরলো যারা করোনার আগে হয় টিউশনি করতো নয় তো ছোটখাটো কোর প্রতিষ্ঠানে কাজ করতো। মো: তাজুল ইসলাম রাজিব সেই সব বেকার যুবকদেরকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিলেন, কিছু ছেলেদের নিয়ে তৈরি করলেন নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আজাদ। ফিশারিজ। প্রথমে যা শুধুই সখের জন্য করা কিংবা করোনা পরিস্থিতে নিজেকে ব্যস্ত রাখা সেটাই হয়ে উঠলো একটি ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান। যেই বেকার যুবকদের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করলেন তাদেরকে নিজ অর্থায়নে জেলার মৎস ও প্রাণি সম্পদ অধিদফতর থেকে প্রশিক্ষণ করিয়ে সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পন্থায় পুরো উদ্যমে শুরু করলেন নতুন ব্যবসায়ীক কার্যক্রম। বাড়ীর পরিত্যক্ত আঙ্গিণাকে কাজে লাগিয়ে তেলাপিয়া, কৈ, গোলসা আর চিংড়ি চাষের জন্য গড়ে তুললেন ৩,৮০,০০০ হাজার লিটার সমৃদ্ধ ছোট বড় মোট আটটি চৌবাচ্চা সাথে কয়েক প্রকার রঙ্গিণ মাছের খামার। পথচলা শুরু হলো নতুন ব্যবসায়ের এবং একাধিক বেকার যুবক পেলেন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। আজ মো: তাজুল ইসলাম রাজিব শুধু নিজ জেলাতেই নয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করছেন দেশি-বিদেশী মাছ। ব্যবসায়ীক লাভ লোকসানের গন্ডিতে নিজেকে আবদ্ধ রাখেননি নিজেকে, তার স্ব-উদ্যগে এবং নিজের আজাদ ফিশারিজের পরিকল্পনা ও ব্যবহারিক জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিতে চান তরুণদের মাঝে। তাই নিজ বাড়ীতেই কোন প্রকার অর্থ নেয়া ছাড়াই বায়োফ্লক বিষয়ে নিজে শেখার পাশাপাশি অন্যদেরও চেষ্টা করেন শেখানোর। জেলা মৎস ও প্রাণি সম্পদ অধিদফতরে অনেক সময়ে সেমিনার ও কর্মশালাতে অংশগ্রহণকারী বহু তরুণ তরুণীদেরকে তার আজাদ ফিশারিজের বায়োফ্লকের সকল কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হবার সুযোগও করে দেন। যাতে করে তরুণরা উৎসাহিত ও অনুপ্রানিত হবার সাথে সাথে সাবলম্বীও হতে পারে। এছাড়াও মো: তাজুল ইসলাম রাজিব তার নিজ বাড়ীতেই বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকশ কবুতর, পাখি, ময়ূর, হরিণসহ নানান ধরণের পশুপাখি ও লালন পালন করেন। মো: তাজুল ইসলাম রাজিবের মতে-" একজন সফল ব্যবসায়ী কিংবা উদ্যেক্তার কাজ শুধু মুনাফা অর্জন নয়, তাকে ব্যবসায়ের নতুন পথও সৃষ্টি করে দিতে হয়।"

আজ তার নিজ ইচ্ছা ও ধারাবাহিক পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে নারায়ণগঞ্জে স্বনামধন্য বায়োফ্লক প্রতিষ্ঠান আজাদ ফিশারিজ, অনেকেই এখন তার মত করে বায়োফ্লক নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। মো: রাজিব ইসলাম রাজিব স্বপ্ন দেখেন নিজ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে চাষ করা মাছ এক সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করার এতে যেমন বৈদেশ মুদ্রা অর্জন হবে একই সাথে কৃষিজ এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ। তাই তিনি প্রতিদিনই বায়োফ্লক বিষয়টিকে আরও কিভাবে বৈজ্ঞানিক ভাবে এগিয়ে নেয়া যায়, অধিক পরিমানে মৎস উৎপাদন করা যায় সেই বিষয়ে গবেষণা অব্যহত রেখেছেন।

মো: তাজুল ইসলাম রাজিব মনে করেন, কোন ব্যবসায়ই ছোট নয় মেধা, বুদ্ধি, পরিশ্রমের সংমিশ্রণে নতুন কিছু করার আগ্রহ থাকলে যেকোন ব্যবসাতেই সফল হওয়া যায়। তিনি এই বিষয়ে আদর্শ মনে করেন তার বাবাকে নারায়ণগঞ্জ জেলায় ছোট পরিসরের ব্যবসা থেকে তার বাবা গড়ে তুলেছেন বিশাল এক প্রতিষ্ঠান, ঠিক তিনিও এগিয়ে নিয়ে যেতে চান নিজেকে। মো: তাজুল ইসলাম রাজিব দেশের তরুণদের কাছে এক আদর্শ দৃষ্টান্ত, যেই বয়সে একজন সফল ব্যবসায়ীর সন্তান আরাম আয়েশে দিনযাপন করে কিংবা বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমান। মো: তাজুল ইসলাম রাজিব তাদের ঠিক বিপরিত তিনি নিজ দেশেই থাকতে চান গড়ে তুলতে চান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। মো: তাজুল ইসলাম রাজিব কেবল আজাদ নীট নয়, আজাদ টেক্সটাইল এর পরিচালক, কাইফ ডেভেলপমেন্ট লি: এর চেয়ারম্যান, আজাদ ফিশারিজ এর প্রোপ্রাইটর। তাছাড়া তিনি তার নিজ এলাকা রসূলবাগ যুব সংঘের সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ ফুটবল একাডেমীর একজন সম্মানিত পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান, নারায়ণগঞ্জ ক্লাব লি: এর এককন সদস্যসহ নানান সামাজিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত। ব্যক্তি জীবনে তাজুল ইসলাম রাজিব ও তার স্ত্রী নাইমা আকবর দুজন সুখী দম্পতি, জারা ইসলাম ও রাজিন ইসলাম জাফির নামে তাদের রয়েছে দুই সন্তান। সবশেষে বলা যায় মো: তাজুল ইসলাম রাজিব একজন সফল ব্যবসায়ী এবং স্বপ্নবাজ মানুষ যিনি স্বপ্ন দেখেন বায়োফ্লকসহ আরও নতুন ও ভিন্ন ধরণের ব্যবসায়ের এবং সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই পথ হাটছেন।